আজকাল ১ টাকার কয়েন আমাদের হাতে থাকেইনা। কারন মুদ্রাস্ফীতির কারনে বাজারে পন্যের দাম বেশি, আর সেই ‘বেশি’ দামের জিনিষ কেনার জন্য আমাদেরকে সাথে বহনও করতে হয় অমন বড় ডিনোমিনেইশানের নোট। যে দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার যত বেশি, সেই দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংক ইস্যুও করে তত বড় বড় অংকের নোট। এই কারনে জিম্বাবুয়েতে আমরা কয়েক বছর আগেও ১০০ বিলিয়ন অংকের নোটের প্রচলন দেখেছি।
এবার মুল কথায় আসি। বর্তমানকালে কোন দোকান থেকে আপনি ১০ টাকার নোট ভাঙ্গিয়ে ৯ টাকার জিনিষ কিনলে দোকানদাররা আপনাকে কদাচিৎ ১ টাকা ফেরত দিবে; ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই আপনার হাতে একটা ‘আলপিন’ বা ‘মিস্টার ম্যাঙ্গো’ ধরিয়ে দিবে তারা, আর আপনিও দিব্যি সেটা নিয়ে চলে আসবেন।
যে ব্যপারটা আপনি খেয়াল করছেন না সেটা হচ্ছে, উপরের কেইসে আপনি ৯ টাকার জিনিষ কিনলে আপনাকে দোকানদারের ফেরত দেয়ার কথা ছিল ১ টাকা। ১ টাকা মানে ১ টাকাই; ১ পয়সাও কম না। কিন্তু সেই দোকানদার নগদ টাকা ফেরত না দিয়ে আপনার প্রাপ্য ১ টাকা কে ক্যান্ডিতে রুপান্তর করে আপনাকে ফেরত দিচ্ছে মাত্র ৫০ পয়সা। কারন ওই ক্যান্ডি কিনতে দোকানদারের ব্যয় হয়েছে ৫০ পয়সাই; ১ টাকা নয়। ১ টাকার কয়েনের বদলে একটা ক্যান্ডি পেয়ে আপনি সেটার দাম ১ টাকাই ধরে নিচ্ছেন আপনার পারস্পেক্টিভ থেকে; আদতে সেটা ওই দোকানদারের পারস্পেক্টিভ থেকে ১ টাকা নয় বরং সেটার অ্যাকচুয়াল ভ্যাল্যু তার কাছে ৫০ পয়সা। তার মানে, আপনি ৯ টাকার জিনিষ কিনে দোকানদারকে দিয়ে আসছেন সাড়ে নয় টাকা।
১ টাকার কয়েন নেই – এই অজুহাতে একটা দোকান প্রতিদিন যদি ২০ জন কাস্টমারকেও আলপিন ধরিয়ে দেয় তাহলে বছরে ওই দোকানদার প্রায় ৩৬০০ টাকার ইনকাম করবে এই ‘১ টাকার কয়েন নেই’ বিযনেস থেকে। পরিমাণটা আরও বেশি হতে পারে।
ইসলাম নিয়ে আমার জ্ঞান অনেক স্বল্প; ফতওয়া দেয়ার ক্ষমতা আমার আধিকারে নেই। তবে যতটুকো জানি তার আলোকে বলতে গেলে, ইসলামে ট্রেড আর ট্রেডের কন্ডিশন সব এক্সপ্লিসিট; ওই দোকানদারের এমন ইমপ্লাইড বিযনেস যেখানে সে কাস্টমারকে না জানিয়ে ৫০ পয়সা বেশি নিয়ে যাচ্ছে, এমন সওদা ইসলাম অনুমোদন করেনা। আল্লাহু আলাম।
আমি বলি কী, আজ থেকে ১ টাকার বদলে দোকানদার ক্যান্ডি ধরিয়ে দিলে মনে মনে সাদকাহর নিয়ত করে ওই ক্যান্ডি নিয়েই চলে আসবেন!
No comments:
Post a Comment