Tuesday, February 17, 2015

রশি ওয়ালা মাতবর


এক বৃদ্ধ লোকের খুব শখ হল তিনি খেজুর গাছে উঠবেন। জোশের বশে এক লাফ দিয়ে গাছের মাথায় চড়ে বসলেন। কিন্তু সমস্যায় পড়লেন নামতে গিয়ে। নামতে পারছেন না তিনি। গাছের উপর থেকে তাই চিৎকার করছেন নিজেকে নামানোর জন্য।

তার হাঁক-ডাক শুনে মানুষ জমায়েত হল গাছের নিচে। কেউই বুদ্ধি বের করতে পারছেনা তাকে কীভাবে নামানো যায়।
অগত্যা গ্রামের মাতবর কে ডেকে আনা হল।

মাতবর বুদ্ধি দিলেন একটা রশির একমাথা বৃদ্ধ লোকটার দিকে ছুড়ে দিতে। বৃদ্ধ লোকটা সেটা লুফে নিতেই রশির অন্য মাথা ধরে মাতবর টান দিলেন। একদম চিৎপটাং হয়ে আগা থেকে মাটিতে পড়ে গেলেন বৃদ্ধ লোকটা। বৃদ্ধ মানুষ, গা সয়ে নিতে পারেনি ব্যাপারটা। মারাই গেলেন তিনি।

উৎসুক গ্রামবাসী বলতে লাগল, এটা কী বুদ্ধি দিলেন মাতবর সাব? গাছের ডালে লোকটা কমসেকম বেঁচে তো ছিল। আপনি তো মাটিতে আছাড় খাইয়ে মেরেই ফেললেন উনাকে! কী কাণ্ড কী কাণ্ড!"

মাতবর বললেন, আমি তো ঠিকই করেছি। কয়দিন আগে কূপের মধ্যে এক লোক পড়ে গিয়েছিল। তার দিকেও রশি ছুড়ে দিয়েছিলাম। রশি ধরে টেনে তাকে দিব্যি উদ্ধার করেছিলাম।

এখন আপনাদেরকে জিজ্ঞেস করি, 

কূপে পড়ে যাওয়া মানুষ আর গাছের আগায় ঝুলে থাকা মানুষ এক হল? দুজনের উদ্ধারের পদ্ধতি কি এক হতে পারে?

না।

কুফফার আর মুসলিমদের মিসালও এমনই। কুফফাররা যে ভাবে তাদের সমস্যা থেকে উদ্ধার পাবে, মুসলিমরাও ঠিক একই ভাবে উদ্ধার পাবে, এটা কখনোই হওয়ার নয়। নিজেদের ধর্ম থেকে সরে গিয়ে, তালমুদ-বাইবেল  ছেড়ে দিয়ে কুফফাররা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতি করছে, নিজেদের ব্যক্তিগত, জাতীয়, আর্থ-সামাজিক সব সমস্যার সমাধান করছে মুসলিমরাও এই কাজ করলে কুফফারদের মত উন্নয়নের পথে সহযাত্রী হবে এমনটা কিয়ামাত পর্যন্তও সম্ভব নয়। কারন,

غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
...তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে...

ওরা লানত প্রাপ্ত আর পথভ্রষ্ট। পথভ্রষ্টদের পথে যেন আল্লাহ আমাদেরকে পরিচালিত না করেন যে জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাতে আমরা দুয়া করি গোয়াইরিল মাগদুবী আলাইহিম ওয়ালা দ্দোয়াল্লীনা...  বলে।

আল্লাহ তাই মুসলিমদের জন্য আলদা এক পথ করে দিয়েছেন। ওদের পথ আর আমাদের পথ এক হবে কেন?

রশি ওয়ালা মাতবরের কথা আমলে না নেয়াই ভাল।

No comments:

Post a Comment