Saturday, February 7, 2015

‘এনকাউন্টার’

এনকাউন্টার (পড়ুন ফেইক এনকাউন্টার) এই ব্যাপারটা প্রথমে শুরু হয়েছিল ইন্ডিয়াতে। ১৯৮২ সালে প্রথম এনকাউন্টার হলেও ৯০এর দশকে ইন্ডিয়াতে এনকাউন্টারের ঋতু চাঙ্গা হতে থাকে। বলবে যে অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে দুপক্ষের গোলাগুলিতে আসামী মারা গিয়েছে। কে যায় বাবা ওসব আবর্জনা জেলে পুরে রাখতে!

ইন্ডিয়াতে নতুন কিছু শুরু হবে আর বাংলাদেশে তা আসবেনা, সেটা কি হয়? না হয়না। আর তাই বাংলাদেশেও এটা
শুরু হলতবে ভিন্ননাম দিয়ে  

বেকুব বঙ্গালী শব্দচয়নে বড় একটা ভুল করে ফেললো।  এনকাউন্টার শব্দটা শুনলে কিন্তু আপনার মনে হবেঃ an unexpected or casual meeting with someone or somethingগোলাগুলি বা হত্যার বিন্দুমাত্র নাম-গন্ধ আছে এতে? নেই

কিন্তু একই জিনিষের নাম হিসেবে বাঙালি ব্যবহার করল ক্রসফায়ারনামের শেষেই আছে ফায়ারশব্দটা। ফলে ক্রসফায়ার কী সেটা কেউ প্রথমে না জানলেও এটা ঠিকই সে অনুমান করে নিতে পারত যে, জিনিষটা আর যাই হউক, ভাল কিছু না নামেই যেহেতু ওসব ফায়ার-টায়ার কীসব আছে।

মজার ব্যাপারটা কি জানেন?

উইকিপিডিয়াতে এনকাউন্টার লিখে সার্চ দিলে ইন্ডিয়ান পুলিশের করা সব এনকাঊন্টারের বিস্তারিত ফিরিস্তি পাবেন। মুম্বাই পুলিশ ডিপার্ট্মেন্টের ইন্সপেক্টর প্রদীপ শর্মা আর সাব-ইন্সপেক্টর দয়া নায়ক - এই দুজনকে বলা হয় এনকাউন্টার স্পেশালিস্টকারন এনকাউন্টারকে তারা এক শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন, মোসাদ যেমন অপহরণকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তারা ৯০এর দিকে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রথমজন ৩১২ টা আর দ্বিতীয়জন ৮৩ টা এঙ্কাউন্টার করেছেন (পড়ুন আসামী মেরেছেন)।

ইন্ডিয়ার মানবাধিকার কমিশনের কাছে ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সংঘটিত ৪৪০ টা ফেইক এনকাউন্টের ঘটনা লিপিবদ্ধ আছে। আসল সংখ্যাটা যে আরও অনেক বেশি, সেটা বলাই বাহুল্য। এটাও উইকি থেকে পাওয়া।

কিন্তু বাংলাদেশের ক্রসফায়ার নিয়ে নেটে কিছুই নেই, কোন উচ্চবাচ্য নেই। কিছু লিংক পাবেন যেগুলো হয়ত দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ওয়েবসাইটের অথবা ইংরেজি পত্রিকার। সবগুলতেই এক কথা ক্রসফায়ার বেড়ে গেছে, এটা কাম্য না কমাতে হবে এই আর কী।
কিন্তু ক্রসফায়ারে নিহত হচ্ছে কয়জন, আর সবচেয়ে বড়কথা কাদেরকেক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে সেই ব্যাপারে সবাই একদম স্পিকটি নট।

আমার কাছে যেটা মনে হল আর কী,

বাঙ্গালী এখন যাও একটু-আধটু প্রশ্ন তোলে, ক্রসফায়ার শব্দটা ব্যবহার না করে এতদিন ধরে এনকাউন্টার শব্দটা ব্যবহার করা হলে সেটাও করতনা হয়ত। আমাদের তো স্নায়ু দুর্বল, সহজেই কাজ করেনা। রাস্তায় রাস্তায় হার্বাল কোম্পানির বিজ্ঞাপন কি সাধেই এত বেশি?

No comments:

Post a Comment