‘সেলামি’, ‘বকশিশ’ ইত্যাদি নাম দিয়ে বিভিন্ন উপলক্ষে বাচ্চাদের হাতে আমরা টাকা দেই। কিন্তু কুরআনের একটা আয়াতকে সামনে রেখে উলামাগন অবোধ বাচ্চাদের হাতে টাকা দেয়াটাকে নিষেধ করেন।
আয়াতটা হচ্ছে এইঃ
وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ الَّتِي جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ قِيَامًا وَارْزُقُوهُمْ فِيهَا وَاكْسُوهُمْ وَقُولُوا لَهُمْ قَوْلًا مَّعْرُوفًا [٤:٥]
মাওলানা জহুরুল হকঃ
“আর অবোধদের দিয়ে দিও না তোমাদের সম্পত্তি যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য অবলন্বনস্বরূপ করেছেন। আর তা থেকে তাদের খাওয়াও ও তাদের পরাও, আর তাদের বলো ভালোভালো কথা।”
মাওলানা মুহিউদ্দিন খানঃ
“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদেরকে সান্তনার বানী শোনাও।“
(সূরাঃ আন-নিসা, আয়াতঃ ৫)
শাইখ শাহ ওয়ালিউল্লাহকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ছোট ছোট বাচ্চা যারা বোঝেনা – তাদের হাতে টাকা দেয়া যাবে কিনা। উত্তরে তিনি এই আয়াতকে উপস্থাপন করে বাচ্চাদের হাতে টাকা দেয়া নিষেধ করেন।
তাফসিরে তাবারি আর তাফসিরে ইবনে কাসির পড়লে দেখা যায়, প্রায় সব মুফাসসিরগন এই ব্যাপারে একমত যে (السُّفَهَا) বা ‘অবোধ/অর্বাচীন’ শব্দটা দিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের কথা বলা হচ্ছে।
কিছু মুফাসসির মনে করে থাকেন যে এই আয়াতে শুধু নিজেদের অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের কথা বলা হচ্ছে – বাবারা তাদের অবোধ শিশু এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের হাতে যেন সম্পদ তুলে না দেন। বরং নিজের হাতে সম্পদ রেখে সেটা স্ত্রী আর সন্তানদের জন্য ব্যয় করবেন, যাবতীয় খরচ মেটাবেন।
তবে অধিকাংশ মুফাসসিরগনই মনে করেন এই আয়াত সব অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের কথাই বলছে। কিছু কিছু মুফাসসির ইয়াতিম অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন কারন আগের আয়াতগুলোতে ইয়াতিমের মাল তাদের হাতে অর্পণ এবং স্ত্রীলোকের মোহর তাদেরকে পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ইবনে কাসির এই আয়াতের ব্যখ্যায় শিশুদের পাশাপাশি আরও তিন শ্রেণীর মানুষের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা হল, (১) পাগল (২) বোকা এবং (৩) বেদ্বীন।
No comments:
Post a Comment