Saturday, October 21, 2017

ফুল ফ্রেম ক্যামেরা বনাম ক্রপ ক্যামেরা



ফুল ফ্রেম ক্যামেরা বনাম ক্রপ ক্যামেরা নিয়ে জানতে চাইলে প্রথমে জানতে হবে ডিজিটাল ক্যামেরার ইমেজ সেন্সর নিয়ে।

ক্যামেরার ইমেজ সেন্সর কী?

এটা ক্যামেরার ভিতরের আয়তাকার একটা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যা মূলত ছবি ধারণ করে। লেন্সের মাধ্যমে আলো এই সেন্সরে প্রবেশ করে এবং আপনি দেখেন যে ক্যামেরা ছবি তুলেছে। এটা হচ্ছে খুব সহজ ভাষায় ইমেজ সেন্সরের পরিচয়। 

ক্যামেরা ইমেজ সেন্সর


 ফিল্ম ক্যামেরার যুগে যখন ডিজিটাল ক্যামেরার ইমেজ সেন্সর বলতে কিছুই ছিলোনা তখন ছবি ধারণ করা হত ফিল্মে এবং আকারের ভিত্তিতে ফিল্ম ছোট, বড় ও মাঝারি সাইজের হত। ফিল্মের এসব সাইজের মধ্যে ২৪মিমি X ৩৬মিমি আকারের একটা ফিল্ম ছিলো যাকে বলা হত ৩৫মিমি ফিল্ম এবং একে ধরা হত স্ট্যান্ডার্ড ফিল্ম সাইজ হিসেবে। এখানে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখা উচিত যে ৩৫মিমি ফিল্ম বলতে ফিল্মের সাইজকে বুঝানো হয়; ৩৫মিমি ফোকাল লেংথের লেন্সকে নয়। 

৩৫মিমি ফিল্ম

 ডিজিটাল ক্যামেরার যুগে আকারের ভিত্তিতে ক্যামেরার সেন্সরও ছোট, বড় মাঝারি ইত্যাদি নানান সাইজের হয়। সেন্সর যত বড় হবে ক্যামেরা চারপাশের অনেক কিছু দেখতে পাবে এবং সেন্সর যত ছোট হবে ক্যামেরা অনেক কম দেখতে পাবে এটা হচ্ছে বিভিন্ন সেন্সরের মধ্যে মূল পার্থক্য এছাড়া আরও অনেক পার্থক্য আছে যেগুলো একটু পর আলোচনা করা হবে।

এই নানান সাইজের সেন্সরের মধ্যে একটা সেন্সরের সাইজ হচ্ছে সেই ফিল্মের যুগের ২৪মিমি X ৩৬মিমি ফিল্মের সাইজের মত আর এই সাইজের সেন্সরটাকেই বলা হয় Full Frame Sensorফুল ফ্রেম ক্যামেরা বডি বলতে সেই ক্যামেরাগুলোকে বুঝায় যেই ক্যামেরাগুলোতে এই সাইজের সেন্সর রয়েছে।

তাহলে ক্রপ সেন্সর কোনগুলো? খুব সহজ - ফুল ফ্রেম সেন্সরের ছোট যত ছোট ছোট সেন্সর আছে আক্ষরিক অর্থে সেগুলো সবই ক্রপ সেন্সর এবং এসব সেন্সর যেসব ক্যামেরায় আছে সেগুলো সবই ক্রপ ক্যামেরা। 

বিভিন্ন সাইজের সেন্সর

 কিন্তু ডিএসএলআর-এর ক্ষেত্রে ব্যবহারিক অর্থে ক্রপ সেন্সর কথাটা দিয়ে এমন একটা সেন্সরকে বুঝায় যেটার সাইজ ফুল ফ্রেম সেন্সর থেকে দুই ধাপ নিচে। নিকন ক্যামেরায় এর সাইজ ২৩.৬০মিমি X ১৫.৬০মিমি এবং এই সাইজের সেন্সরকে Advanced Photo System type-Classic বা এপিএস-সি সেন্সর সাইজ বলা হয়। ফুল ফ্রেম সেন্সর এবং এপিএস-সি সেন্সর বর্তমানে এই দুই ধরণের সেন্সরই ডিএসএলআর ক্যামেরায় ব্যবহৃত হয় এবং এই এপিএস-সি সেন্সর সমৃদ্ধ ডিএসএলআর ক্যামেরাকে বলা হয় ক্রপ ক্যামেরা। ফুল (সম্পূর্ণ) এবং ক্রপ (কেটে নেয়া) কথা দুটো এসেছে মূলত সেন্সরের সাইজ ছোট-বড় হওয়া থেকে; ক্যামেরার বডির সাইজের জন্য নয় কিন্তু। নিকন তাদের ফুল ফ্রেম ক্যামেরাকে FX দিয়ে এবং ক্রপ ক্যামেরাকে DX দিয়ে প্রকাশ করে।

[নোটঃ ক্যানন এক সময় তাদের 1D সিরিজে এপিএস-সি থেকে এক ধাপ উপরে এবং ফুল ফ্রেম থেকে এক ধাপ নিচে একটা সেন্সর ব্যবহার করত যেটাকে বলা হয় APS-H সেন্সর। এখন ক্যানন এই সেন্সরের ডিএসএলআর ক্যামেরা বানায় না আর এটাও একটা ক্রপ সেন্সর]

এখন তাহলে জেনে নেই ফুল ফ্রেম ক্যামেরা এবং ক্রপ ক্যামেরার মধ্যকার আর কী কী পার্থক্য আছে।

১.  ফিল্ড অফ ভিউ

আমার লেখার উপরে বলেছিলাম সেন্সর যত বড় হবে ক্যামেরা চারপাশের অনেক কিছু দেখতে পারবে এবং সেন্সর যত ছোট হবে ক্যামেরা চারপাশের কম দৃশ্য দেখতে পারবে। একটা ক্যামেরা তার চারপাশের দৃশ্য কতটা দেখতে পারে এটাকে বলা হয় ফিল্ড অফ ভিউফুল ফ্রেমে বড় ফিল্ড অফ ভিউ এবং ক্রপ ক্যামেরায় ছোট ফিল্ড অফ ভিউ। তবে ক্রপ ফ্যাক্টর অ্যাডজাস্ট করে সঠিক লেন্স নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ক্রপ সেন্সর ক্যামেরা দিয়েও ফুল ফ্রেম ক্যামেরার ফিল্ড অফ ভিউ পাওয়া যায়। সেই ব্যাপারে পরে আলোচনা হবে।



কিন্তু ফিল্ড অফ ভিউ বড় হলে ভালো বা ছোট হলে খারাপ, এমনটা কোনভাবেই বলা যায়না। সবকিছুই নির্ভর করে আপনি কিসের ছবি তুলবেন। ছোট ফিল্ড অফ ভিউ-এর একটা সুবিধা, যদিও এটার মানে হচ্ছে ক্যামেরা চারপাশে কম দেখতে পাবে, এটার আরেকটা মানে হচ্ছে এটা দূরের জিনিষকে কাছে নিয়ে আসে। এর সহজ মানেটা হচ্ছে, ফুল ফ্রেম ক্যামেরা দিয়ে চারপাশের দৃশ্য ধারণ হবে তো বেশি ঠিক আছে, ক্রপ ক্যামেরা দিয়ে সেই একই লেন্স ব্যবহার করে দূরের জিনিষ দেখা যাবে কাছে। অর্থাৎ ফিল্ড অফ ভিউ কম হলে ছবি যুম ইন হয় আর ফিল্ড অফ ভিউ বেশি হলে ছবি যুম আউট হয়। ল্যান্ডস্কেপ ছবিতে ফুল ফ্রেম ভালো পারফর্মেন্স দিলেও ওয়াইল্ড লাইফ এবং স্পোর্টস ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ক্রপ ক্যামেরা কিন্তু অনেক কাজের। কারণ তখন ফুল ফ্রেম ক্যামেরা দিয়ে দূরের যেই পাখিটা ছোট দেখবেন, ক্রপ ক্যামেরা দিয়ে সেই পাখিটা আরও কাছে দেখবেন, যদিও পাখিটার চাপাশে অনেক এরিয়া ক্রপড হয়ে গেছে। মূলত দূরের পাখিটা কাছে চলে এসে বড় হয়ে ধরা দেয়ার কারণেই এর পাশের অনেক কিছু ছবিতে আসেনি। 

২. আইএসও এবং লো-লাইট পারফর্মেন্স

বড় সেন্সরে অল্প আলোতেও ভালো ছবি উঠবে এবং ছোট সেন্সরে অল্প আলোতে তুলনামূলক কম ভালো ছবি উঠবে। খেয়াল করে দেখবেন অল্প আলোতে আপনার মোবাইল দিয়ে যেই মানের ছবি পাবেন  ডিএসএলআর দিয়ে তার চেয়ে ভালো মানের ছবি পাবেন। কারণ এই ক্ষেত্রে মোবাইলের সেন্সর হচ্ছে ছোট সেন্সর। ফুল ফ্রেম বনাম ক্রপ সেন্সরের জন্যেও কথাটা ঠিক।

বামে ফুল ফ্রেম এবং ডানে ক্রপ। আইএসও ৬৪০০ খেয়াল করুন

৩. ডায়নামিক রেঞ্জ

সংগীতে ডায়নামিক রেঞ্জ কথাটা এক অর্থে ব্যবহৃত হলেও ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ডায়নামিক রেঞ্জ ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। সহজ কথায় বলতে গেলে, ডায়নামিক রেঞ্জ যদি কম হয় তাহলে সম্ভাবনা আছে যে প্রখর আলোতে বেশিরভাগ সময়ই ছবির কিছু অংশ এমনভাবে জ্বলে যাবে যে সেটা কোন ফটো এডিটর দিয়েই ফেরত পাওয়া সম্ভব হবেনা। ফটোগ্রাফির পরিভাষায় একে বলা হয় Blown out highlightsআবার এমনও হতে পারে, ছবির কিছু অংশ এমনভাবে ছায়ায় পড়ে যাবে যে কোন ফটো এডিটর দিয়েও সেই ছায়ার অংশ থেকে আসল রঙ উপস্থাপন করা যাচ্ছেনা। ল্যান্ডস্কেপ ছবিতে এই ডায়নামিক রেঞ্জের ব্যাপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় সেন্সরে ডায়নামিক রেঞ্জের পারফর্মেন্সও ভালো হয়।

৪. ডেপথ অফ ফিল্ড

ডেপথ অফ ফিল্ড মানে হচ্ছে ক্যামেরার সবচেয়ে নিকটতম সাব্জেক্ট থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী সাব্জেক্টের মধ্যকার জায়গা কতখানি শার্প। এটাকেই আমরা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার হিসেবে চিনিবড় সেন্সর দিয়ে খুব শ্যালো ডেপথ অফ ফিল্ড পাওয়া যায় অর্থাৎ বেশি ব্লার পাওয়া যায়অন্যদিকে ছোট সেন্সরের ডেপথ অফ ফিল্ড তুলনামূলক ডিপ অর্থাৎ ব্লার হয় কমআর এই কারণে আপনার মোবাইল দিয়ে খুব বেশি ব্লার হয়না কারণ এর সেন্সর সাইজ একটা ডিএসএলআর ক্যামেরার তুলনায় ছোট। তবে এই ব্যাপারটা একটা বিবাদের বিষয়। কারো মতে সেন্সর সাইয ডেপথ অফ ফিল্ডকে প্রভাবিত করে এবং কারো মতে সেন্সর সাইয ডেপথ অফ ফিল্ডকে প্রভাবিত করেনা। তবে এটা সত্য ক্রপ ফ্যাক্টর অ্যাডাজাস্ট করে সঠিক লেন্স নির্বাচন করার মাধ্যমে একটা ছোট সেন্সর বা বড় সেন্সরের দুটো ভিন্ন ক্যামেরায় একইরকম ডেপথ অফ ফিল্ড অর্জন করা সম্ভব।

বামে ক্রপ ক্যামেরা এবং ডানে ফুল ফ্রেম ক্যামেরা

 আমার এই কথাগুলোর মধ্যে 'ক্রপ ফ্যাক্টর' কথাটা অনেকবার ব্যবহার করেছি। কিন্তু এটা কী জিনিষ?

ফিল্ম ক্যামেরার যুগে ৩৫মিমি ফিল্ম ছিল স্ট্যান্ডার্ড এটা আমরা আগেই জেনেছি। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, ডিএসএলআর ক্যামেরার জগতে আগে উদ্ভাবিত হয় ক্রপ ক্যামেরা এবং তারপর আসে ফুল ফ্রেম ক্যামেরা। কারণ প্রথম পর্যায়ে ফুল ফ্রেম ক্যামেরার সেন্সর বানানো ছিলো খুব ব্যয়বহুল। 

ফিল্ম ক্যামেরার যুগ থেকে ফটোগ্রাফি করে আসা মানুষ যখন ক্রপ ক্যামেরা ব্যবহার করা শুরু করলো তখন দেখা দিলো একটা বিপদ। কারণ ৩৫মিমি ফিল্ম ক্যামেরা ব্যবহারকারীরা যখন ছোট সেন্সরের ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি তোলা শুরু করলেন তখন তারা একটা নির্দিষ্ট ফোকাল লেংথে ছবি তুলে সেই ফিল্ড অফ ভিউটাই পাচ্ছিলেন না যেটা এতদিন ৩৫মিমি ফিল্মে পেয়ে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রপ বডিতে ৫০মিমি  ফোকাল লেংথে ছবি তোলার পর সেটা তাদেরকে তেমন ফিল্ড অফ ভিউ দিচ্ছিলোনা যেমনটা ৩৫মিমি ফিল্ম ক্যামেরায় ৫০মিমি ফোকাল লেংথে ছবি তোলার পর তারা এতদিন পেয়ে আসছিলেন। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য এমন কিছু একটা দরকার ছিলো যা ক্রপ ক্যামেরায় লাগানো লেন্সের ফোকাল লেংথকে ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় লাগানো লেন্সের সমমানের ফোকাল লেংথে রূপান্তর করে দিতে পারবে। আর এই কাজ করার জন্য একটা সংখ্যা ব্যবহার করা হয় সেটাকেই বলা হয় ক্রপ ফ্যাক্টর। যেমন ধরুন, একটা ডিএক্স ক্যামেরায় ৫০মিমি লেন্স লাগালেন। উপরের আলোচনা থেকে তো আমরা জানলাম সেইম লেন্সে ক্রপ ক্যামেরার ফিল্ড অফ ভিউ যেমন আসবে ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় ফিল্ড অফ ভিউ ভিউ তেমন আসবে না। তাহলে কেমন আসবে? এটা জানার জন্য আপনি ডিএক্স ক্যামেরায় যেই ফোকাল লেংথের লেন্স লাগিয়েছেন তার সাথে ক্রপ ফ্যাক্টর নামক সংখ্যাটা গুণ করবেন। নিকনের জন্য এই ক্রপ ফ্যাক্টর ১.৫। তাহলে সংখ্যাটা আসে (৫০ X ১.৫) = ৭৫মিমি। এর অর্থ, ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় একটা ৭৫মিমি লেন্স লাগালে ফিল্ড অফ ভিউ যেমন আসবে এখন আপনার ক্রপ ক্যামেরায় ৫০মিমি লেন্স লাগানোর ফলে ঠিক তেমন ফিল্ড অফ ভিউ দেখা যাচ্ছে। বা ধরুন, আপনি দেখলেন একটা ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় ৩৫মিমি লেন্স লাগানোর পর এর ফিল্ড অফ ভিউটা আপনার কাছে অনেক সুন্দর লাগছে। কিন্তু আপনি ক্রপ ক্যামেরা ব্যবহার করেন এবং জানেন আপনার ক্যামেরায় ৩৫মিমি লেন্স লাগালেই ঠিক তেমন ছবি পাবেন না। তাহলে কী করলে এমন ছবি পাবেন? এখন তাহলে আপনার কাজ হবে (৩৫/১.৫) = ২৪মিমি এর একটা লেন্স আপনার ক্রপ ক্যামেরায় লাগানোতাহলে আপনি সেই ফিল্ড অফ ভিউটাই পাবেন যেটা ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় ৩৫মিমি লেন্সে ছবি তুলে পেয়েছেন। এখানে লক্ষ্য করার ব্যাপারটা হচ্ছে, এর মানে এই না যে ৫০মিমি ফোকাল লেংথের একটা লেন্স এফএক্স বডিতে ৫০মিমি কিন্তু সেটা ডিএক্স বডিতে ৭৫মিমি হয়ে যায়। ফোকাল লেংথ সেন্সর সাইয নির্বিশেষে সব সময়ই এক থাকে।
 

বিভিন্ন সেন্সরের ক্রপ ফ্যাক্টর

তাহলে বুঝতেই পারছেন ক্রপ ফ্যাক্টরের কাজটা কীক্রপ ফ্যাক্টর হচ্ছে একটা অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিষ। পৃথিবীতে যদি ফুল ফ্রেম ক্যামেরা বলে কিছু না থাকত বা পৃথিবীর সব ক্যামেরাই যদি ফুল ফ্রেম হত তাহলে এই ক্রপ ফ্যাক্টরের কোন অস্তিত্ব থাকতনা। আমাদের মাথার উপরে কেউ নেই তাই আমি কারো সাথে নিজেকে তুলনা করতে যাইও না। কিন্তু ব্যাপারটা হলো, পৃথিবীতে অনেক সেন্সরের ক্যামেরা আছে কাজেই ক্রপ ফ্যাক্টরের ব্যাপারটাও থাকবে।

এখন প্রশ্ন হলো আপনি কোন ধরণের ডিএসএলআর কিনবেন, ফুল ফ্রেম না ক্রপ?

এর উত্তর পাওয়ার জন্য দুটো  প্রশ্ন নিজেকে করুনঃ

১. আপনার বাজেট কত?
২. আপনি কি শৌখিন ফটোগ্রাফার না প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার?

ফুল ফ্রেম কেমেরাগুলো দামি হয় এবং আকারে বেশ বড় হয়। নিকন ডি৭৫০ হচ্ছে নিকনের ফুল ফ্রেম ক্যামেরা যার বডির দামই শুধু ১.৩০ লাখ টাকার মত।

আপনি প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার না হলে এবং শুধু বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের ছবি, পোরট্রেইট, মাঝে মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান কাভার, স্ট্রিট, ল্যান্ডস্কেপ ইত্যাদি সব ধরণের ছবি তোলার জন্যে ক্যামেরা চাইলে আপনার জন্য এপিএস-সি যথেষ্ট ভালো ক্যামেরা এবং কোন দরকার নেই ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় অতিরিক্ত অর্থ ঢালা। ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় তখনই যাওয়া উচিত যখন আপনি মনে করবেন যে ক্যামেরার মাধ্যমে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। উপরে বড় সেন্সর এবং ছোট সেন্সরের পার্থক্য গুলো রিলেটিভ টার্মে অর্থাৎ একটার সাথে আরেকটা তুলনা করতে গেলে। কিন্তু তুলনা বাদ দিলে ক্রপ ক্যামেরার মান অনেক ভালো এবং এটা আপনার প্রয়োজনের সবই পূরণ করতে পারবে।

বর্তমানে বাজারে আছে এমন কিছু ফুল ফ্রেম এবং ক্রপ বডির মডেল নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
 

নিকনের কিছু ফুল ফ্রেম ক্যামেরার মডেলঃ Nikon D610, D750, D810, D850, D5 ইত্যাদি
নিকনের কিছু ক্রপ ক্যামেরার মডেলঃ Nikon D3300, D3400, D5300, D5500, D5600, D7100, D7200, D7500, D500
ক্যাননের কিছু ফুল ফ্রেম ক্যামেরার মডেলঃ Canon 6D, 6Dii, 5Diii, 5Div, 1Dxii
ক্যাননের কিছু ক্রপ ক্যামেরার মডেলঃ Canon 700D, 750D, 760D, 70D, 77D, 80D 

দেখতেই পাচ্ছেন ক্রপ ক্যামেরার মডেলগুলোই বেশি আর ফুল ফ্রেম ক্যামেরার মডেলগুলো কম। কারণ বেশিরভাগ মানুষের কাজ ঐ ক্রপ ক্যামেরা দিয়েই হয়ে যায়।

আজ এই পর্যন্তই।

No comments:

Post a Comment