সমকামীদের
পক্ষে সাফাই গাওয়ার এক পর্যায়ে ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট শাম্মী হক ডয়চে
ভেলেকে বলেন,
“অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, ইসলাম ধর্মে যে বেহেস্তের উল্লেখ রয়েছে, যেখানে পুণ্যবান মানুষের স্থান হবে, সুখ-সমৃদ্ধে ভরপুর থাকবে, সেখানে ‘গেলমানের' (তরুণ পুরুষ, যারা হবে সুরিক্ষিত মনিমুক্তার মতো সুদর্শন) ব্যবস্থাও রেখেছে৷ তাহলে বেহেস্তে যদি সমকামিতাকে পুণ্যবানের পুরস্কার হিসেব রাখা হয়, সেই একই বিষয় পৃথিবীতে কোনো নিষিদ্ধ এবং ঘৃণ্য বস্তু রূপে দেখছে ধর্ম?” (http://tinyurl.com/nekh8h6)
“অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, ইসলাম ধর্মে যে বেহেস্তের উল্লেখ রয়েছে, যেখানে পুণ্যবান মানুষের স্থান হবে, সুখ-সমৃদ্ধে ভরপুর থাকবে, সেখানে ‘গেলমানের' (তরুণ পুরুষ, যারা হবে সুরিক্ষিত মনিমুক্তার মতো সুদর্শন) ব্যবস্থাও রেখেছে৷ তাহলে বেহেস্তে যদি সমকামিতাকে পুণ্যবানের পুরস্কার হিসেব রাখা হয়, সেই একই বিষয় পৃথিবীতে কোনো নিষিদ্ধ এবং ঘৃণ্য বস্তু রূপে দেখছে ধর্ম?” (http://tinyurl.com/nekh8h6)
‘গেলমান’ শব্দটা ব্যবহার করতেই বুঝলাম, মহিলা হুমায়ূন আজাদের রগরগে সাহিত্যের মস্ত
ভক্ত। বাংলা সাহিত্যে এই শব্দটা প্রচলন করেন হুমায়ূন আজাদ, তার পাক সার জমিন সাদ
বাদ গ্রন্থটা দিয়ে। একজন ‘ধার্মিক’ সমকামীকে ব্যঙ্গ করার ইঙ্গিতে তিনি শব্দটা
ব্যবহার করেন। বাংলা সাহিত্যে বর্তমানে এর মানেটা হলো সমকামী কিশোর।
জান্নাতের তরুন কিশোরদের ব্যাপারে কুরআনের মোট তিন জায়গায় আলোচনা পাওয়া যায় – ৫২
নাম্বার সূরা আত-তূরে, ৫৬ নাম্বার সূরা আল-ওয়াকিয়াতে এবং ৭৬ নাম্বার সূরা
আল-ইনসানে।
এবার আয়াতগুলো দেখি,
সূরা আত-তূরঃ
২৩. সেখানে তারা একে অপরকে পানপাত্র দেবে; যাতে অসার বকাবকি নেই এবং পাপকর্মও নেই।
২৪. সুরক্ষিত মোতিসদৃশ কিশোররা তাদের সেবায় ঘুরাফেরা করবে।
---- -----------
সূরা আল-ওয়াকিয়াঃ
১৭. তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা।
১৮. পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে।
১৯. যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত ও হবে না।
২০. আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে,
২১. এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।
--------- ------------ ----------
সূরা আল-ইনসান
১৭. তাদেরকে সেখানে পান করানো হবে ‘যানজাবীল’ মিশ্রিত পানপাত্র।
১৮. এটা জান্নাতস্থিত ‘সালসাবীল’ নামক একটি ঝরণা।
১৯. তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরগণ। আপনি তাদেরকে দেখে মনে করবেন যেন
বিক্ষিপ্ত মনি-মুক্তা।
---- ------------- ------
.
জান্নাতের ‘চির কিশোরদের’ আয়াতগুলো এত বেশি সেলফ-এক্সপ্ল্যানেটরি যে শুধু এই
আয়াতের ব্যাখ্যাগুলো মুফাসসিরে কিরাম করতে যানও নি।
জান্নাতে চির কিশোরেরা কেন থাকবে? চির কিশোরেরা জান্নাতিদের ভৃত্যের ন্যায়। তারা
জান্নাতীদের সেবায় নিয়োজিত থাকাবে যেটা আল্লাহ সুবহান ওয়া তা’আলা স্পষ্ট করেই আগের
এবং পরের আয়াতগুলোতে বলে দিয়েছেন। পানপাত্র আর জান্নতি ড্রিংক্স নিয়ে এই চির
কিশোরেরা জান্নাতীদের কাছে ঘোরাফেরা করবে। জান্নাতীদের পছন্দমত নানান প্রকারের
ফলমূল আর ঈপ্সিত পাখির গোশত নিয়ে তাদের আশেপাশেই অবস্থান করবে যেন কেউ চাওয়া
মাত্রই তাকে সেটা সার্ভ করা যায়।
এই জান্নাতী কিশোরেরা চিরকাল একই বয়সে থাকবে। তাদের বয়স কখনো বাড়বে না, কমবেও না।
এই কারনেই তারা ‘চির কিশোর’।
শাম্মী হক গং কেন মনে করে জান্নাতে এই কিশোরদের সাথে জান্নাতী পুরুষগণ সমকামে
যাবেন সেটা অনেক চিন্তা করেও বের করতে পারলাম না। খুব বাজে ভাবে মানসিক
বিকারগ্রস্ত না হয়ে গেলে এমন চিন্তা কারো মাথায় আসা সম্ভবও না। খুবসম্ভবত
‘বিক্ষিপ্ত মনিমুক্তার মতো সুদর্শন’ উপমাগুলো শুনে তাদের সমকামে বিকৃত মনে এই
ভাবনাটা চলে এসেছে। হয়ত এই আয়াতগুলোর ক্ষেত্রে তারা নিজেদেরকে দিয়ে চিন্তা করে
মানে বের করেছে, তারা হলে কী করত।
সে যাই হোক। ইবনে কাসির এই ব্যাপারে কী বলেছেন সেটা শুনুনঃ
তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মণি-মুক্তা। তারা মূল্যবান পোশাক আর
অলংকার পরিহিত হবে এবং বিভিন্ন কাজে ছোটাছুটি করবে। এই কারনেই মনে হবে যে তারা
ছড়ানো মণি-মুক্তা। সুন্দর এই কিশোরেরা মূল্যবান পোশাক পরিচ্ছদ এবং অলংকার নিয়ে
তাদের জান্নাতি মনিবদের খিদমতে বিভিন্ন কাজে এদিক থেকে ওদিক ছোটাছুটি-দৌড়াদৌড়ি
করবে। (তাফসির ইবনে কাসীর)
মাওলানা সালাউদ্দিন ইউসুফ বলেনঃ
জান্নাতীদের সেবার জন্য তাদেরকে সেবক দেয়া হবে, যারা বয়সে চির কিশোর হবে। তারা
জান্নাতীদের সেবা-শুশ্রূষার কাজে ঘুরে বেড়াবে। সৌন্দর্যে, চমৎকারিত্বে আর
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় তারা হবে সেই মুক্তাসদৃশ্য যাকে সুরক্ষিত রাখা হয় এই আশংকায়
যে তাতে হাত লেগে তার চমক ও ঔজ্জ্বল্য যেন নষ্ট না হয়ে যায়। (তাফসিরে আহসানুল
বায়ান)
জান্নাতের সবকিছুই সুরক্ষিত কারণ আপনার জান্নাতে আপনার নিয়ামতগুলো আপনার অবর্তমানে
কেউ ব্যবহার করছেনা। আপনি গিয়ে সবই সুরক্ষিত অবস্থায় পাবেন। আর জান্নাতে সবকিছুই
সুন্দর, সুশ্রী আর আকর্ষণীয়। কুৎসিত কিছু জান্নাতে নেই। কাজেই জান্নাতের কিশোর
বালকেরা দেখতে কেন সুন্দর হবে, এই অভিযোগ করার জন্য কোন গ্রাউন্ড নেই শাম্মী হকদের
কাছে।
আমার কথা খুব সোজা। তোরা সমকামে নিমজ্জিত হয়ে পৃথিবী থেকে একদম extinct হয়ে যা।
কিন্তু নিজেদের কুৎসিত রুচি আর কদর্য কাজের পক্ষে সাফাই দেওয়ার জন্য কুরআনকে
ব্যবহার এসব কাজ করার চিন্তাও ও করিস না। ১৪০০ বছর ধরে যে ব্যাখ্যা সালাফে
সালেহীনেরা করেন নি, উলামারা করেন নি সেখানে যবর-যের-পেশ ছাড়া আরবি আর উর্দুর
মধ্যে পার্থক্য না করতে পারা তসলিমা আর আজাদেরা যা বলবে সেটাকেই দৈব জ্ঞান করছিস?
শাম্মী হক গং কেন মনে করে জান্নাতে এই কিশোরদের সাথে জান্নাতী পুরুষগণ সমকামে যাবেন সেটা অনেক চিন্তা করেও বের করতে পারলাম না। খুব বাজে ভাবে মানসিক বিকারগ্রস্ত না হয়ে গেলে এমন চিন্তা কারো মাথায় আসা সম্ভবও না। খুবসম্ভবত ‘বিক্ষিপ্ত মনিমুক্তার মতো সুদর্শন’ উপমাগুলো শুনে তাদের সমকামে বিকৃত মনে এই ভাবনাটা চলে এসেছে। হয়ত এই আয়াতগুলোর ক্ষেত্রে তারা নিজেদেরকে দিয়ে চিন্তা করে মানে বের করেছে, তারা হলে কী করত।
ReplyDeleteনাস্তিকরা সমকামিতাকে বৈধ করার জন্যই গেলমানঃ শব্দের অপব্যাখ্যা করে
ReplyDeleteযে কাজ পশুরাও করে সেটার বৈধতা দেয়ার জন্য নাস্তিক তথা ইসলাম বিদ্বেষীরা উঠে পরে লেগেছে।তারা কি সাধারণ এই জিনিসটা বুঝেনা যে পাপের জন্য আল্লাহ একটি জাতিকে পুরুপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে সেটার বৈধতা জান্নাতে কি করে দিবে।
ReplyDelete